একটি ই-লার্নিং কোর্স তৈরি করার জন্য সর্বদা অনেক প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়। এবং আপনি এখনও কীভাবে একটি ই-লার্নিং কোর্স তৈরি করবেন তা নিয়ে ভাবছেন ? এত টেনশন করবেন না। আসুন ই-লার্নিং কোর্স তৈরি করার সহজ কিছু সহায়ক টিপস জেনে নিন এবং একজন ই-লার্নিং কোর্স ক্রিয়েটর হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলুন ।
ধাপ ১: আপনার অডিয়েন্স সনাক্ত করুন
আপনার অডিয়েন্স কখনই সবাই হওয়া উচিত নয়। কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট শুরু করার আগে আপনাকে আপনার অডিয়েন্স চিহ্নিত করতে হবে ।
এটি প্রয়োজনীয় কারণ বয়স, অবস্থান, শিক্ষাগত স্তর, বৈশিষ্ট্য, ইত্যাদি সহ তারা কারা তা তাদের শেখার শৈলীকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অডিয়েন্স এর প্রয়োজন বা চাহিদা পূরণ করতে হবে ।
উদাহরণস্বরূপ, বাচ্চারা কার্টুনের মতো মজার এবং রঙিন ডিজাইনের বিষয়বস্তু পছন্দ করে। তাই আপনি যদি শিশুদের জন্য কোনো কোর্স ডিসাইন করতে চান তাহলে গণিতকে চিত্রিত করার জন্য অ্যানিমেশন বেছে নিতে পারেন ।
ধাপ ২ : কোর্সের লক্ষ্য এবং শেখার উদ্দেশ্য স্পষ্ট করুন
প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার আরেকটি মূল ধাপ হল অনলাইন কোর্সের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলিকে স্পষ্ট করা। প্রশিক্ষণ শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা কী ফলাফল পাবে? অথবা তারা কোর্স জুড়ে কি করতে সক্ষম হবে ? আপনার কোর্সের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে এই প্রশ্নের উত্তর দিন।
একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য আপনার সমগ্র কোর্সের জন্য একটি নির্দেশিকা হিসাবে ভূমিকা পালন করবে। এটি আপনাকে একটি ই-লার্নিং কোর্স ডিজাইন করতেও সাহায্য করে যা শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী।
ধাপ ৩: কোর্সটি কীভাবে ডেলিভারি দিবেন তা নির্ধারণ করুন।
এই ধাপটি নির্ধারণ করবে কিভাবে শিক্ষার্থীরা শেখার অভিজ্ঞতা লাভ করবে। একটি ই-লার্নিং কোর্স ডিজাইন করার জন্য তিনটি জনপ্রিয় ফর্ম রয়েছে; পাঠ্য-ভিত্তিক, ভিডিও-ভিত্তিক, এবং গেম-ভিত্তিক । এটি আপনার অডিয়েন্স এর শেখার উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে।
ডেলিভারি ফর্মের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে, আপনি নিজেই কোর্সের উপকরণ তৈরি করতে পারবেন কি না তা জানতে পারবেন। আপনি এটি নিজেই করতে পারবেন নাকি কাউকে আউটসোর্স করতে হবে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন ।
ধাপ ৪: তথ্য সংগ্রহ করুন এবং আপনার বিষয়বস্তু গঠন করুন
একটি সফল ই-লার্নিং কোর্সের জন্য সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করতে, আপনাকে বিষয়-বিশেষজ্ঞ এবং স্টেকহোল্ডারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।
সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্টরা মূল আইডিয়া জেনারেটর হিসেবে কাজ করে এবং তথ্যের প্রধান উৎস। তারা পরে শেখার উপকরণগুলিকে যাচাই এবং সংশোধন করতেও সাহায্য করে।
স্টেকহোল্ডাররা কোর্সের প্রজেক্ট ম্যানেজার, উপরের ম্যানেজার, প্রশিক্ষক বা যেকোনো প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হতে পারে। তাদের সকলেই আপনাকে সর্বদা প্রকল্পটি ট্র্যাকে রাখতে সহায়তা করবে।
একটি ই-লার্নিং কোর্স তৈরির পরবর্তী ধাপ হল সমস্ত সংগৃহীত তথ্য সংগঠিত করা। একটি পরিষ্কার এবং শক্তিশালী কোর্সের কাঠামো বা রূপরেখা শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রমকে আরও ভালভাবে দেখতে দেয়। অন্যথায়, একটি অসংগঠিত কাঠামো শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে পারে।
ধাপ ৫: শেখার উপকরণগুলি সম্পূর্ণ করুন, সব কন্টেন্ট একসাথে রাখুন।
বিশেষ করে, আপনি সমস্ত কোর্স সেশনের জন্য বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করবেন। এর মানে হল যে আপনাকে আউটলাইনে সমস্ত ফটো, ভিডিও, চার্ট, ইনফোগ্রাফিক্স বা অ্যানিমেশনগুলি পূরণ করতে হবে।
কোর্সের উন্নয়নের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্ভব হলে গল্প বলার পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন ।
এটি একটি অফলাইন বা অনলাইন যে ধরণের কোর্সই হোক না কেন, শেখার প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখতে মূল্যায়ন বা জ্ঞান পরীক্ষা করা প্রয়োজন। একটি ভাল মূল্যায়ন অবশ্যই প্রাসঙ্গিক এবং শেখার প্রক্রিয়ার সাথে একত্রিত হতে হবে।
ই-লার্নিং কোর্সে, কুইজ এবং পরীক্ষা হল মূল্যায়ন এবং জ্ঞান পরীক্ষার প্রাথমিক হাতিয়ার। শিক্ষার্থীরা কীভাবে প্রদত্ত তথ্য বোঝে এবং মনে রাখে তা বুঝতে সাহায্য করে মূল্যায়ন পদ্ধতি ।এটি কোর্সের কার্যকারিতাও পরিমাপ করে।
ধাপ ৬: আপনার ই-লার্নিং কোর্স পাবলিশ করুন
আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার আগে, আপনি শিক্ষার্থীদের একটি ছোট গ্রুপের সাথে একটি পাইলট রান করতে পারেন। কোর্সের বিষয়ে যাদের সামান্য জ্ঞান আছে তাদের বেছে নিতে ভুলবেন না যাতে আপনি আরও ভালো ফিডব্যাক পেতে পারেন।
আমরা আশা করি আপনি এই 6-পদক্ষেপ নির্দেশিকাটি আপনার অনলাইন প্রশিক্ষণ বিষয়বস্তু বিকাশের জন্য সহায়ক হবেন।